
বিশেষ প্রতিনিধি: বৃহস্পতিবার গণভবনে শিক্ষামন্ত্র্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং ১০ শিক্ষাবোর্ডের প্রধানের কাছ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার ফল গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি ভিডিও কনফারেন্সে নেত্রকোণার সঙ্গে যুক্ত হন।
নেত্রকোণা সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান চৌধুরী ভিডিও কনফারেন্সে প্রধামন্ত্রীকে জানান, তিনি ডাক্তার হতে চান। আর তার কথা শুনে প্রধানমন্ত্রী বললেন, তিনি এই জেলায় একটি মেডিকেল কলেজ করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাববেন।
সেখানে তিনজন পরীক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন যাদের একজন মুশফিক। তিনি বলেন, ‘আমি বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং আমি ডাক্তার হতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার সরকারের সময়ে দেশে পাবলিক মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ১৪টি থেকে বেড়ে ৩০টি হয়েছে। এ বছর আরও ৩০০টি আসন বাড়ানো হয়েছে যা গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের খবর। আমাদের জন্য দোয়া করবেন, আমরা যেন সুনাগরিক এবং মানুষ হতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী পরে বলেন, ‘মুশফিক তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। তুমি ডাক্তার হতে চাও শুনে খুব খুশি, তুমি ডাক্তার হয়ে জনগণের সেবা করবে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত কর্মকর্তাদেরকে বলেন, ‘নেত্রকোণায় মেডিকেল কলেজ আছে?’
একজন জবাব দেন, ‘নাই স্যার।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ময়মনসিংহ আছে, নেত্রকোণায় নাই।’
‘কিন্তু বাজিতপুরে আছে। বাজিতপুর তো আবার কিশোরগঞ্জে।’
‘ঠিক আছে দেখি, সে (মুশফিক) যখন ডাক্তার হবে তখন তো একটা ভালো মেডিকেল কলেজ হওয়া দরকার।’
‘ঠিক আছে আমি দেখি।’
এর আগে নেত্রকোণা সরকারি মহিলা কলেজের উপমা সাহা কথা বলেন, ‘আপনার সুযোগ্য নেতৃত্বে নেত্রকোণাসহ সারাদেশে নারীরা আজ সর্বক্ষেত্রে সম্মানজনক অবস্থানে উন্নীত হয়েছে এবং হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।’
‘হাওর-বাওর পরিবেষ্টিত নেত্রকোণায় আপনি শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন। এটি উদ্বোধন করতে আপনি এখানে আসবে, এটা আমাদের একান্ত প্রত্যাশা।’
সব শেষে কথা বলেন, স্থানীয় কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মারুফ হাসান। বলেন, ‘শিক্ষা ক্ষেত্রে আমরা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি। আপনি শিক্ষার মান উন্নয়নে এবং শিক্ষা গ্রহণে ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ করার লক্ষ্যে স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার মধ্যে সকল বৈষম্য সফলভাবে দূরীভূত করেছেন।’
‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অধীনে মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগ স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামিয়া আরবি বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। …আপনার একান্ত আগ্রহে ১৭ মাদ্রাসায় অনার্স ও ৩০টি মাদ্রাসা কোর্স প্রবর্তন করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করার জন্য কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা সনদকে স্বীকৃতি প্রদানের ঘোষণা দিয়ে যুগান্তকারী উদাহরণ স্থাপন করেছেন। এসব পদক্ষেপের ফলে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা হয়েছে আরও আধুনিক ও বেগবান।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই মাদ্রাসা শিক্ষাও যুগো্পযোগী হোক, আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হোক, যেন সকলে আমরা এক হয়ে কাজ করতে পারি। ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি পাঠ্যবই শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
‘জ্ঞান বিজ্ঞানের দিক থেকে মুসলমানরা সব সময় অনেক বেশি অগ্রগামী ছিল। আর আমাদের দেশে শিক্ষার ভিত্তিটা কিন্তু তৈরি করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা। সে জন্য আমি উদ্যোহী হয়েছে, যেন কেউ এই শিক্ষাটাকে অবহেলা না করতে পারে।’