দুর্গাপুরে হারিয়ে যাওয়া তাঁত শিল্প জেগে ওঠার স্বপ্ন দেখছে

দুর্গাপুর প্রতিনিধি: নজরকাড়া ডিজাইন আর মন মাতানো রঙ্গে তাঁতে কাপড় বুনে চলছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার আদিবাসী এলাকা বিরিশিরির গাড়ো মহিলারা। তৈরীকৃত আদিবাসী পোষাক স্থানীয় চাহিদার পাশাপাশি পর্যটকরাও কিনে নিচ্ছেন প্রতিনিয়ত।এখানকার আদিবাসী মহিলারা অন্যান্য পেশার পাশাপাশি তাঁত শিল্পের কাজে সাচ্ছন্নবোধ করেন বেশী। একসময় এ শিল্প ছেড়ে তারা চাষাবাদ সহ নানা কাজে জড়িয়ে পড়লেও কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে তাঁদের প্রিয় তাঁত শিল্প। অত্র এলাকার আদিবাসীদের কথা ভেবে মামনীয় প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রশীদ এর সহায়তায় স্থানীয় আদিবাসী মহিলা সংগঠনের সদস্যগন আবার শুরু করেছেন তাঁদের প্রিয় তাঁত শিল্পের কাজ।

এ বিষয়ে শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, তাঁতের ঠকঠক শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিরিশিরির একমাত্র তাঁত ঘরটি। আদিবাসী মহিলা সদস্যগন তাঁদের ঐতিহ্যগত পোষাক ‘‘দকমান্দা’’ তৈরিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। এখানে কমবেশি সবাই তাঁতের সঙ্গে পরিচিত। তাঁতকে পুরোপুরি শিল্পে রূপান্তর করতে সকলেই কাজ করে যাচ্ছেন। এখানে নতুন তাঁত মেশিন না থাকায় এখনও পুরাতন মেশিনে কাপড় বুনায় এ শিল্প থেকে সঠিক সময়ে সরবরাহে বাঁধার সন্মোখিন হতে হচ্ছে তাঁদের। এ নিয়ে আদিবাসী শ্রমিক শেফা ¤্রং বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহায়তায় আমাদের হারিয়ে যাওয়া শিল্প পুনরায় ফিরে পেয়েছি। সরকারের সহায়তা পেলে, আমরা এ শিল্পকে অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারবো। নতুন মেশিন না থাকায় কাপড় তৈরীতে বেশি খরচ পড়ায় বাইরে বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হয়। আমাদের এ শিল্পকে রক্ষার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিনা সুদে ঋণ প্রদান করলে, আমাদের পোষাক দেশের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাহিরেও সরবরাহ করতে পারবো।

আদিবাসী নারী সংগঠন ওয়াইডব্লিউসিএর সাধারণ সম্পাদিকা লুদিয়া রুমা সাংমা বলেন, এক সময় আদিবাসীরা তাঁত শিল্পে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে আসছিল। ধীরে ধীরে এ শিল্পটি আধুনিকতা ও অর্থ অভাবের কারনে যেন হার মেনে যায়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখনো এ শিল্পটিকে বৃহৎ শিল্পে রূপান্তরের স্বপ্ন দেখেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলারা। এখানে প্রায় ৪০টি মেশিন রয়েছে, সুতা কাটার মেশিন সহ অন্যান্য আধুনিক যন্ত্র ক্রয় করতে পারলে, কম খরচেই তৈরী করা যেতো আদিবাসী পোষাক সহ অন্যান্য পোষক। এতে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাজিরেও রপ্তানী করা যেতো।

তাঁত শিল্প নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রশীদ এ প্রতিনিধিকে বলেন, এ শিল্প রক্ষায় আমাদের সহায়তা অব্যহত রয়েছে। স্থানীয় আদিবাসী নারীরা গৃহের কাজ সেরে তাঁত দিয়ে কাপড় তৈরি করেন। তাঁতের তৈরি কাপড়কে আকর্ষণীয় করতে কাপড়ে বুটিকের কাজ করতে উন্নত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সরকারী ঋণ দেয়া হলে এ শিল্প নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হতো। এ অঞ্চলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন সহ তাঁত শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে মননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করছি।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।