আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন স্কুলে পড়তে শিশুদের ভালোলাগে-ইউএনও খালিয়াজুরী

শফিকুল ইসলাম তালুকদার খালিয়াজুরী থেকে: শ্রেণী কক্ষের ভিতরের দেয়ালে আঁকা আছে সৌন্দর্যময় ও শিক্ষামূলক নানা ধরনের ছবি। বাহিরে মনোমুগ্ধকর আলপনা। সাজানো শ্রেণী কক্ষ রয়েছে সুষ্ঠু পড়াশুনার পরিবেশ। শিশুরা খেলার ছলে পড়ছে। কেউবা দেয়ালে লিখা কবিতা মুখস্ত করছে। তারা মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। শিক্ষকরাও পরম মমতায় পড়াচ্ছেন। আনন্দঘন এমন পরিবেশে পাঠদান কার্যক্রম চলছে নেত্রকোণার হাওরদ্বীপ খালিয়াজুরী উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের পূর্ব জগন্নাথপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়টি আনন্দের এক রঙ্গীন ফুল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে উপজেলাজুড়ে। জানা যায়, ১৯৬৭ সালে উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে হাজী বশির উদ্দিনের সু-হৃদয় প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত পূর্ব জগন্নাথপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। প্রত্যান্ত হাওরাঞ্চলের এই বিদ্যালয়টিকে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে নির্বাচিত করেছেন কয়েক বার। ফুটবল সহ বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় উপজেলার শীর্ষে রয়েছে বিদ্যালয়টি। খেলাধুলার পাশাপাশি লেখাপড়ায়ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রশংসা অর্জন করেছে। রয়েছে সু-সজ্জ্বিত ভবন, সঙ্গীন শ্রেণী কক্ষ, শহীদ মিনার, পাঠাগার ও ফুলের বাগান। বিদ্যালয়টি শিক্ষা ছাড়াও ক্রীড়া, সাহিত্য ও সংস্কৃতিসহ বহুমূখী শিক্ষা কার্যক্রমে সফলতা পেয়েছে। শ্রেণী কক্ষগুলো নামকরণ করা হয়েছে কবি-সাহিত্যিকদের নামে। সেখানে তাদের ছবির সঙ্গে সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত লেখা আছে। বিদ্যালয়ে ৩৬৭ জন শিক্ষার্থী আনন্দে লেখাপড়া করছে। শিক্ষকরাও সন্তান¯েœহে পড়াচ্ছেন। তাই প্রতিদিনের উপস্থিতি শতভাগ। পাঁচজন শিক্ষকের অক্লান্ত পরিশ্রমে এগিয়ে যাওয়া এই রঙ্গীন বিদ্যালয়টি উপজেলার মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যদি এভাবে সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে ক্লাস নেওয়া হয়, তাহলে শিক্ষার মান আরও বাড়বে বলে মনে করেন অভিভাবকরা। পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী পলি আক্তার বলে, আমাদের বিদ্যালয়টি খুব সুন্দর, সব শ্রেণী কক্ষই সাজানো, আমরা গানের মাধ্যমে কবিতা শিখি, স্যারেরা আমাদের খুব আদর করেন। জগন্নাথপুর গ্রামের অভিভাবক রাজবানু আক্তার বলেন, আমার মেয়ে বিদ্যালয়ে এলে আর বাড়ি যেতে চায়না। এখানেই ওর ভাল লাগে। সহকারী শিক্ষক মোঃ শিপন মিয়া বলেন, এরই মধ্যে আমাদের বিদ্যালয়ে দুইজন শিক্ষক আইসিটির ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছে। আমরা অন্তত্য প্রতিদিন একটি ক্লাস মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে নিয়ে থাকি। আমাদের প্রধান শিক্ষকের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারনে বিদ্যালয়টি সুন্দর ও মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পরার প্রবনতা একেবারেই নেই। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা স্বপ্ন দেখেছি এমন একটি বিদ্যালয়ের যেখানে শিশুরা আনন্দের সাথে পড়বে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের সহযোগীতায় ও পরিকল্পনায় ইউনিসেফের অর্থায়নের মাধ্যমে বিদ্যালয়টি সু-সজ্জ্বিত করা হয়েছে, আমাদের সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, পূর্ব জগন্নাথপুর সরকারী প্রাথমকি বিদ্যালয়ের শিশুরা আনন্দে পড়বে, আলোকিত মানুষ হয়ে আলো ছড়াবে সব খানে, এই প্রত্যাশাই করি। প্রতিষ্ঠানটি উপজেলার একটি দৃষ্টান্ত। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন বাবু বলেন, বিদ্যালয়টি দেখতে খুব সুন্দর, দেয়াল থেকে শুরু করে আসবাব ও অন্যান্য উপকরণ খুব আকর্ষনীয়। আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন স্কুলে পড়তে ভালোলাগে শিশুদের। তিঁনি বলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটা শিশুর জন্য শ্রেণী কক্ষটাই একটা জগতের সমতুল্য। শ্রেণী কক্ষ বা ক্লাসরুমটা তাদের মনের মত হওয়া চাই। খুব ভাল লেগেছে, প্রধান শিক্ষক একজন গুণি মানুষ, তার প্রচেষ্টায় একটি সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তাই শিক্ষার্থীরাও আনন্দে লেখাপড়া করছে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।