নেত্রকোণায় ২২ দিনে প্রায় সাড়ে তিন কোটির টাকার মাদক উদ্ধার

বিশেষ প্রতিনিধি: মাদক ছড়িয়ে পড়েছে শহর থেকে গ্রামে। শহরের রাজ পথ থেকে মাদকের বিচরণ এখন গ্রামে অলিগলি। মাদকের ভয়াবহতায় চারদিকে। আর এ ব্যবসায় জড়িয়ে পরছে নানান শ্রেণী পেশার মানুষ। মাদক ব্যবসায়ীদের জাল এখন নিন্ম শ্রেণীর সাধারণ মানুষ। এর ছোবল থেকে নিজে বাঁচতে নিজের সন্তানকে বাঁচাতে আইন শৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি এগিয়ে আসতে হবে সাধারণ মানুষকেও।
দেশ ব্যাপী চলছে মাদকের বিশেষ অভিযান। এরই অংশ হিসেবে নেত্রকোণায় চলছে পুলিশের বিশেষ অভিযান। গত চব্বিশ ঘণ্টায় নেত্রকোণায় বিভিন্ন মামলায় ৫১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার বিশেষ অভিযানে বারহাট্টার গুমুরিয়া গ্রাম থেকে আহের বানু (৪৫)কে ২০ পুরিয়া হেরোইন ও একই গ্রামের আব্দুল জলিল মিয়া (৫২)কে ৯ পুরিয়া হেরোইন বারহাট্টা হাসপাতালের সামনে থেকে রফিকুল ইসলাম (৩০) কে ৮ পুরিয়া হেরোইনসহ এবং বাউসী ইউনিয়ন পরিষদের পেছন থেকে আব্দুল মোতালেব (জিতু মিয়া) (৪০) কে ১০০ গ্রাম গাঁজা সহ গ্রেফতার করে পুলিশ।
দুর্গাপুর থেকে ২০ লিটার দেশীয় মদ ৫০০ গ্রাম গাঁজা ও ২০ পুরিয়া হেরোইন সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশের একটি বিশেষ সূত্র জানায়, চলতি মাসের ২২ দিনে নেত্রকোণায় ১০১ টি মাদকের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৪ মামলা ও নেত্রকোণা মাদক দ্রব্য অধিদপ্তর মোট ৩ টি মাদকের মামলা দায়ের করেছে।
এদিকে চলতি মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে গত ২২ দিনে নেত্রকোণায় ৩ কেজি ১৫৩ গ্রাম ৮ পুরিয়া হেরোইন, ২৫৯০ পিস ইয়াবা, ৩০৫ কেজি ২০৫ গ্রাম গাঁজা, ইনজেকশন ২৮০ এম্পুল, ৪৯ লিটার দেশি মদ, ২০ বোতল ভারতীয় মদ ও ২৯ বোতল পেন্সিডিল ও ২২০ লিটার ওয়াশ (মদ তৈরীর উপকরণ) উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ৪৬৪ টি ওয়ারেন্ট তামিল সহ নিয়মিত মামলায় ১৫২ জন গ্রেফতার করা হয়েছে।
নেত্রকোণা জেলা সূজনের সূজনের সভাপতি শ্যামলেন্দু পাল জানান,মাদকের বিস্তার দু’এক দিনে হয়নি। এর ভয়াবহতা এখন চারদিকে। আইনশৃংখলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযান চালাতে হবে। স্কুল কলেজে পাড়া মহল্লায় সভা সেমিনার করে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
নেত্রকোণা সাহিত্য সমাজের সম্পাদক সাইফুল্লাহ ইমরান জানান, মাদক বিরোধী অভিযান দিনক্ষণ ঠিক করে নয়। এটা সারা বছর চলানো উচিত। অনেক সময় দলের প্রশ্রয়ে মাদককে ছাড় দেয়ার চেষ্টা করা হয়। কোনো অবস্থাতেই কাউকেই ছাড় দেয়া উচিত নয়। আর একটা বিষয়,সরকারী ভাবে প্রত্যেক জেলায় একটি করে মাদক নিরাময় কেন্দ্র করা উচিত।
নেত্রকোণার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুল আলম জানান, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। স্থানীয় সচেতন মহল মাদকের ব্যপারে তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।
নেত্রকোণার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী জানান, চলমান বিশেষ অভিযানে আমরা কাজ করছি। হয়তো এ অভিযান শেষ হবে; তারপরও আমরা মাদক নির্মূলে আমাদের অভিযান অব্যাহত রাখবো। মাদক সেবী যারা ভালো হতে চায়, তাদের জেলা পরিষদের মাধ্যমে আমরা শেলাই মেশিন সহ রিক্সা দিয়ে পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করবো। এর আগেও আমরা নেত্রকোণার ২৩৫ জন মাদক সেবীকে আত্মসর্মপণের মাধ্যমে পুর্নবাসনের চেষ্টা করেছি। সারা জেলায় মাদক নির্মূলে অভিযান চলবে। যারা মাদক বিক্রি করে এবং যারা মূল হোতা তাদের আমরা খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনবো।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।