গরম তেলে ঝলসে দেয়া হতো কাজের মেয়েকে !

স্টাফ রির্পোটার: কোনো কাজে সামান্য ত্রুটি পেলেই লৌহদন্ড গরম করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দিতেন গৃহকর্ত্রী। পান থেকে চুন খসলেই গরম পানি আর তেলে ঝলসে দেয়া হতো ছোট্ট শিশু স্মৃতি আক্তারের (৭) দেহ।
একদিন অনুমিত না নিয়ে শ্যাম্পু ব্যবহার করায় অমানবিক নির্যাতনের পর স্মৃতির দু’টি হাত ভেঙে দেন পাষন্ড ওই নারী। আবার কোনো কোনো সময় শিশুটির হাতের আঙুলগুলো কাঠ দিয়ে থেঁতলে দিতেন।
নির্মমতার শিকার হতভাগ্য এই শিশুটি নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের উলুকান্দা গ্রামের দিনমজুর সুলতান মিয়ার মেয়ে। তার ওপর এমন নির্যাতন চালানো হয় রাজধানীর একটি বাসায়। তবে স্মৃতির মা-বাবা নির্যাতনকারী গৃহকর্ত্রী বা তার পরিবারের কোনো সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানেন না।
সোমবার দুপুরে স্মৃতির মা জুলেখা খাতুন জানান, পাশের কয়রা গ্রামের বাসিন্দা দুলাল মিয়ার স্ত্রী হাজেরা খাতুন তিনমাস আগে স্মৃতিকে ঢাকায় কাজে দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যান। পরে স্মৃতিকে একটি বাসায় কাজ করতে দিয়েছেন বলে জানান হাজেরা। কিন্তু এসময়ের মধ্যে স্মৃতির সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি তারা। স্মৃতির ব্যাপারে বারবার জানতে চাইলে হাজেরার বলতেন, স্মৃতি যে বাসায় আছে,খুব ভালো আছে, আনন্দে আছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ মে) রাত ৮টার দিকে আহত অবস্থায় স্মৃতিকে গ্রামে নিয়ে এসে পরিবারের কাছে তুলে দেন হাজেরা। সুস্থ সবল শিশুর শরীরে এতো ক্ষতচিহ্ন, পোড়া দাগ আর দুই হাতও বাঁকা কেন জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর না দিয়ে বরং ঝগড়া জুড়ে দেন হাজেরা। স্মৃতির পরিবারকে দেখে নেয়ারও হুমকি দেন তিনি।

ফিরে আসার পর বাবা-মায়ের কাছে প্রতিদিন তার ওপর চালানো নির্যাতনের বর্ণনা দেয় শিশুটি। স্মৃতির সমস্ত শরীর জুড়ে নির্যাতনের ক্ষতচিহ্ন! বয়সের চেয়ে এখন তার শারীরিক যন্ত্রণা ও দুঃসহ স্মৃতির ওজনই বেশি। পায়ুপথ ও স্পর্শকাতর অঙ্গও রক্ষা পায়নি নির্মমতা থেকে!
স্মৃতির দাদা বয়োবৃদ্ধ রমজান আলীসহ এলাকার আরো অনেকে জানান, হাজেরা কাজ ও অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন গ্রাম থেকে নারী-শিশু নিয়ে যান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এমন করছেন কিন্তু তার বিরুদ্ধে কথা বলার মতো সাহস গ্রামে কারো নেই।স্মৃতির শরীরে এতো ক্ষতচিহ্ন।
এদিকে,ওই গৃহকর্তার নাম-ঠিকানা গোপন রেখে হাজেরা খাতুন জানান, যে বাসায় স্মৃতিকে কাজে দেওয়া হয়েছিল সেই বাসার গৃহকর্তা রাজনৈতিক একটি দলের নেতা। বেশ কয়েকটি বাসা রয়েছে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায়। তবে এখন তাদের তিনি কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।