কলমাকান্দায় বোরো ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত কৃষক

শেখ শামীম, কলমাকান্দা : কলমাকান্দা উপজেেলায় কৃষকরা পড়েছেন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে। উঠতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধানের ভাল ফলন হলেও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারনে ন্যায্য মূল্যে না পাওয়ায় লোকসানে মূখে পড়েছেন চাষীরা। ফলে লোকসানে বোঝা কাঁধে পড়ায় সোনালী হাসির পরিবর্তে চরম হতাশায় পড়েছেন তারা।
গত ইরি-বোরো মৌসুমে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে পাহাড়ি ঢলে আগাম ভয়াবহ বন্যার কারনে উপজেলার সকল ফসলি জমি আবাদি ধান পানির নীচে তলিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। এতে করে ব্যাপক ক্ষতির মূখে পড়েন কৃষকরা।
ওই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এলাকায় কৃষকরা কোমর বেঁধে মাঠে নামেন ইরি-বোরো ধান চাষে। কেউ কেউ বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ও স্হানীয় দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়াসুদে ঋন নিয়ে ধান রোপন করেছেন।
প্রথম দিকে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায়  এবং তেমন রোগ-বালাই না থাকায় উপজেলায় প্রতিটি জমিতে ধান খুবভালো হয়েছিল। তবে ধান পাকার সময় শেষের দিকে নেক ব্লাষ্টারের আক্রমনের কারণে কিছু কিছু এলাকায় বেশ ক্ষতিও হয়েছে। ঠিক যে সময় কৃষকরা ধান কেটে ঘরে তুলবেন সেই সময়েই নেমে আসে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। এতে কৃষকরা চরম আতংকে আর উৎকন্ঠার মধ্যে দিয়ে ধান করে তুলতে থাকেন। এবার বৃষ্টির পানিতে এলাকায় শতাধিক হেক্টর জমির পাঁকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। গত১২ মে উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের মান্দাউরা বিলের বাঁধ ভেঙ্গে শত শত একর জমির পাঁকা ধান পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে বিলপাড়ের কৃষকদের মূখে নেমেছে বিষাদের ছায়া। এতে বিলপাড়ের কৃষকের মধ্যে চলছে ফসল হারানো হাহাকার। গেল বছর বাঁধ ভেঙ্গে ফসল তলিয়ে যাওয়ায়  ক্ষতি পোষিয়ে উঠতে না উঠতেই এ বছর ফের বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বিলপাড়ের শত শত কৃষক পরিবার।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা জানান – ধান ঘরে নই, উঠান পযন্ত্য তুলতে পারলেও ঋনের বোঝার কারণে বজারের ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারছেন না কৃষকরা।
চলতি মৌসুমে সরকারি ভাবে ধান ক্রয়ে মূল্যে প্রতিমন(১০৪০/-) এক হাজার চল্লিশ টাকা নির্ধারণ থাকলেও গত কয়েক দিন ধরে ধানের মোকাম হিসেবে কলমাকান্দায় ৫০০টাকা শুরু করে ধানের রকমভেদে  সর্বোচ্চ ৬৫০টাকা সদরের বিক্রি হচ্ছে! এতে করে ধান বিক্রি করে স্হানীয় কৃষকরা পড়ে পড়েছেন লোকসানের মূখে।
ফলে সোনালী স্বপ্নের পরিবর্তে ঋনের বোঝার ঘাড়ে পড়ায় এবং উঠতি ইরি-বোরো ধানের ক্ষতি কি ভাবে কাটিয়ে উঠবেন তা নিয়ে চরম হতাশায় ও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
উপজেলার মেধীকান্দা বিলের ক্ষুদ্র কৃষক রজব আলী আমাদের সকাল২৪. কম কে জানান – তিনি এনজিও থেকে ঋন নিয়ে ১ একর জমিতে বোরো ধান রোপন করছেন। কিন্তু ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন আমাদের সকাল২৪ ডট কম কে বলেন – চলতি মৌসুমে এ কলমাকান্দায় ২১৩৮০হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান রোপন করা হয়েছে। তাতে ধানের উৎপাদন ভাল হয়েছে। তবে নেক ব্লাষ্টারের প্রাদুর্ভাবে উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় শত শত একর বোরো ধান ক্ষতি হয়েছে। ধানের মোকামে ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারলে লাভবান হবেন কৃষকরা।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।