ধর্মপাশায় সোনালী ধান গোলায় তুলতে ব্যস্ত কৃষক

ধর্মপাশা প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় ফসলের মাঠ জুড়ে ছড়িয়ে আছে সোনালী ধানের আভা। বৈশাখের দখিণা বাতাসে দোল খেতে খেতে দেশের প্রধান এ খাদ্যশস্য হাসি ফুটিয়েছে কৃষকদের মুখে; বাড়িয়ে দিয়েছে তাদের ব্যস্ততা। মাঠের বাম্পার ফলন এখন গোলায় তুলতে ব্যস্ত ধর্মপাশায় উপজেলার কৃষক কৃষাণীরা। যদিও বাজারে কিছুটা মন্দাভাব, তারপরও কষ্টে সৃজিত ফলন আনন্দ-চিত্তেই ঘরে তুলছেন তারা।
উপজেলার ১০ দিন পর সূর্য উঠেছে ধর্মপাশা উপজেলায় আকাশে। ধান শুকাতে পারার আনন্দে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাসি। আল আমিনের পাশের ধানের খলায় ধান শুকানোয় কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক জসিম উদ্দিন। তিনিও আক্ষেপ করে বলেন, ‘বৈশাখ মাসের ১০ দিন পার অইয়্যা গেছে একটা ফুঙ্গা ধানও ঘরে তুলতে পারি নাই। আইজগ্যার রইদে পোলাপাইন লইয়্যা ধান শুকানোর কাজে লাগছি। দেখি আল্লায় কী করেন।’ হাওরপাড়ে কৃষকদের দুঃখের শেষ নেই। পর পর দুই বছর হাওরের ফসল ডুবায় প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছে কৃষক পরিবারগুলো।

এবার বৈশাখ মাসের ১০ দিন পার হওয়ার পর গতকাল শনিবার প্রখর রৌদ্র ওঠার ফলে হাওরপাড়ের কৃষকরা উৎসবের রঙে ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর বৈশাখ মাসের শুরু থেকেই একদিকে বৈরী আবহাওয়া ও মেঘেঢাকা সূর্য, অন্যদিকে হাওরে ধান কাটার শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকরা বিপাকে পড়েন। গত ১০ দিন ধরে যে সমস্ত ধান হাওরে কাটা হ”িছল তাও বৃষ্টির কারণে জমি থেকে নিয়ে আসা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছিল। অনেক কষ্ট স্বীকার করে জমি থেকে কাটা ধান তারা খলায় নিয়ে আসছেন। পাশাপাশি যে সমস্ত ধান মারাই করা হয়েছে সেগুলোতে চারা গজিয়েছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে তারা উৎসবে আনন্দে ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছেন।
উপজেলার ধর্মপাশা সদর গ্রামের কৃষক নুরজামল বলেন, ‘আমি দুই হাল জমির পুরো ধানই মারাই করে খলায় নিয়ে গত ১০ দিন ধরে বসে ছিলাম। আজকের রোদে আশা করি ৮০ ভাগ ধানই গোলাতে উঠে যাবে।’
মাটিকাকাটা গ্রামের কৃষক ইকবাল হোসেন বলেন, ১০দিন পরে রোদ ওঠায় হাওরে কৃষকের মুখে হাসি ফুটছে। এ যেন রোদ নয়, এটি আল্লাহর নিয়ামত। কৃষকরা ভিন্ন আমেজে ধান শুকাচ্ছেন আর আনন্দ করছেন।
ধর্মপাশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোয়েব আহমেদ বলেন, বৈশাখ মাসে প্রায় পুরোটাই বৈরী আবহাওয়ায় হাওরের কৃষক অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছিলেন। এখন থেকে টানা সপ্তাহকাল রোদ থাকলে কৃষকরা ধান নিশ্চিন্তে গোলায় তুলতে পারবেন। ধর্মপাশা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুসাহিদ তালুকদার বলেন, দীর্ঘ ১০
দিন পর প্রখর রোদ ওঠায় উপজেলার বিভিন্ন হাওরের কৃষকের মনের আনন্দে ধান শুকানোয় ব্যস্ত সময় পার করছেন। আমি নিজেও কৃষকদের আনন্দ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধানের খলা ঘুরে দেখেছি।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।