দেলোয়ার হোসেন ময়মনসিংহ থেকে: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে দীর্ঘ ২২ বছর ধরে আইনি লড়াই শেষে ফিরে পাওয়া জমিতে ঘর করেও বসবার করতে পারেননি বৃদ্ধা সাবজান। প্রতিপক্ষের লোকজন সাবজানের ঘর গুড়িয়ে দিয়ে ভিটেকে বানিয়ে দেয় ফসলি জমি। আশ্রয়হারা সাবজানের পাশে দাঁড়িয়েছেন পুলিশ। ময়মনসিংহ পুলিশ সুপারের উদ্যোগে সাবজানকে ঘর করে দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলায় জাটিয়া ইউনিয়নের টাঙ্গনগাতি গ্রামের মৃত রহিম বকসের স্ত্রী মোছা. সাবজান। তার আবদুর রাশিদ ও আবদুর রশিদ নামে দুই ছেলে এবং সাহেরা খাতুন ও রুমেলা খাতুন নামে দুটি মেয়ে রয়েছে। দীর্ঘ দিন আগে স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে মারা যাওয়ার পর থেকে সন্তানদের নিয়ে ভিটে ছাড়া সাবজান। বিভিন্ন কাগজপত্র সংগ্রহ করে ১৯৯৬ সালে ঈশ্বরগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে আট একর ৮১ শতক জমির জন্য মামলা করেন সাবজান। আদালত বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১২ সালের শুরুর দিকে সাবজানের পক্ষে একটি রায় প্রকাশ করেন। এর পর আরো বিভিন্ন জটিলতা শেষে আদালতের নির্দেশে পুলিশের উপস্থিাতিতে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পুলিশ, আদালতের নাজিরসহ অন্যরা সাবজানকে দুই দশমিক ৩৫ একর জমি বুঝিয়ে দেন। সেই জমিতে ঘর তুলতে গেলে বাধা দেয় স্থাানীয়রা। পরে পুলিশের উপস্থিাতিতে ঘর করে বসবাস শুরু করে সাবজান। কিন্তু গত ১২ এপ্রিল রাতে সাবজানকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে ভিটিতে থাকা ৪ টি ঘর ভেঙে গুড়িয়ে দেয় প্রতিপক্ষরা। বিষয়টি নিয়ে গত ১৪ এপ্রিল সাবজান ঈশ^রগঞ্জ থানায় প্রতিপক্ষের ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো অনন্ত ২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। বৃদ্ধার এই করুণ পরিণতির কথা জানতে পেরে ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম সেই বসত ভিটেতে ঘর করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। বুধবার সাবজানের ভিটেতে ঘর তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি বদরুল আলম খান ও একদল পুলিশ সদস্যের উপস্থিাতিতে শুরু হয় ঘর তৈরি কাজ।
খবর পেয়ে বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলিশ শরমিন ঘটনাস্থাল পরিদর্শণ শেষে সাবজানকে ১০ হাজার টাকা ও তিন মান্ডেল টিন দেন। এছাড়া সরকারি বিভিন্ন সুযোগসুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দেন। বিকেলে ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তকর্তার ঘটনাস্থাল পরির্দশণ করেন।
ঈশ^রগঞ্জ থানার ওসি মো. বদরুল আলম খান বলেন, সাবজানের দুরবস্থাার বিষয়টি জেনে পুলিশ সুপার একটি ঘর করে দেবার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনা মোতাবেক সাবজানকে তার পুরোনো ভিটায় ফেরাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।