ধর্মপাশায় ব্লাস্টের আক্রমন বোর ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

মিঠু মিয়া, ধর্মপাশা  প্রতিনিধি:গেলবারের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অকাল বন্যায় ফসল হারানোর পর সুনামগঞ্জের।  ধর্মপাশা উপজেলার  কৃষকরা ধারদেনা করে জমিতে বোরো আবাদ করেছিলেন। এবছর আবারও একই কারণে হাওরে বোরো জমিতে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে।উপজেলার চামরদানী, মধ্যনগর ও বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নে  বোয়ালিয়া, কাইলানী, আহমদিয়া হাওরে বোরো জমিতে ছত্রাক জনিত ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। ধানের শীষ বের হওয়ার পরপরই আক্রান্ত হচ্ছে ধান গাছ। এক জমি থেকে অন্যজমিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ছত্রাকবাহিত রোগ। গেল বারের আগাম বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য হাওর পাড়ের কৃষকরা জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষাবাদ করে ছিলেন। জমিতে ধানের শীষ বের হওয়ার পরপরই ধান গাছের আগা হলুদ রং ধারন করে সাদা হয়ে যায় আর ধান গাছের গোড়া কালো রং ধারন করে। হাওরের কৃষক ও কৃষি।  লোকজন জানান আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান হিসেবে জমিতে উচ্চ ব্রি ২৮ ধানের চাষাবাদ করেছেন হাজার হাজার কৃষক। জেলার বেশির ভাগ হাওরে ২৮ জাতের ধান চাষাবাদ বেশি করা হয়েছে। কিন্তু এবছর ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এবছর আবহওয়া অনুকুলে থাকলেও ব্লাস্ট ধানী জমি আক্রান্ত হওয়া তারা নুতন করে বিপাকে পড়েছেন।মধ্যনগর ইউপির দুগনুই গ্রামের কামাল হোসেন বলেন, তিনি ধারদেনা করে আড়াই হাল (২৮ কেয়ার) জমিতে বোরো আবাদ করে ছিলেন। ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে তার জমির পুরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে। জমির ধান সব সাদা রং ধারন করেছে। কৃষক মন্তাজ বলেন, জমি আগের দিন দেখে গেছি কিছু অংশ সাদা রং ধরেছে আর পরের দিন এসে দেখি পুরো জমির ধান গাছ সাদা রং ধারন করেছে। গাছের ডুগায় ধানের শীষ থাকলে এগুলো চুচা হয়ে গেছে।
চামারদানী কাইলানী হাওরে কৃষক ইকাবাল হোসেন বলেন, এবার বড়ো আশা কইরা মানুষ ঋণফিন কইরা ক্ষেত করছিলো এখন ব্লাটের আক্রমনে তারা সর্বশান্ত হওয়ার পথে। জমিতে ছত্রাক নাশক ও পাম্প মেশিন কেনার ক্ষমতা নেই কৃষতের এগুলো সরকার থেকে বিনা মূলে দিলে কৃষক কিছুটা হলেও ফসল রক্ষা করতে পারবে। আব্দুল আহাদ বলেন যতদিন যাইতাছে ক্ষেত খালি সাদা রং ধরতাছে। কীটনাশক ওষুদ কোন কিছু তে কাজ হচ্ছে না।এ ব্যাপারে মধ্যনগর ইউপি চেয়ারম্যান প্রবীর বিজয় তালুকদার বলেন ‘মোহনগঞ্জ থেকে ২০টি স্প্রে মেশিন মধ্যনগরে সরবরাহ করা হয়েছে। ওইসব হাওরে অর্ধশতাধিক স্প্রে মেশিন সরবরাহ করা হলে বালাইনাশক ব্যবহার দ্রত শেষ করা যাবে। মধ্যনগর ইউনিয়ন পার্শ্ববর্তী চামরদানী ইউনিয়নসহ কয়েকটি হাওরের প্রায় জমিতে এই ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত জমির ধানের ছড়া গজানোর পর আগুনে পোড়ার মতো ধানের চারা ঝলসে গিয়ে সাদা বর্ণ হয়ে পড়েছে। বলেন, গত কয়েক দিন যাবৎ আঙ্গারুলি হাওরে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। এ রোগ এক জমি থেকে অন্য জমিতে ছড়িয়ে পড়ছে।
ধর্মপাশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শোয়েব আহমেদ  জানান, মধ্যনগরেরও চামারদানী ইউপির কয়েকটি হাওরে ২৫ হেক্টর জমির ফসল ব্লাষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তবে স্প্রে মেশিনের স্বল্পতার বিষয়টিও তিনি স্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাসহ সবাই কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন, লিফলেট বিতরণ করছেন, বিভিন্ন বিষয়ে প্রেসক্রিপশন করছেন। মূলত; জমিতে প্রয়োজনীয় পানি না থাকায় এ রোগ দেখা দিয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলে ব্লাষ্টের প্রকোপ কমে আসবে

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।