
এস,এম, সারোয়ার খোকন: নেত্রকোণার মোহনগঞ্জের ডিঙ্গাপোতা হাওরে ব্রি-২৮ জাতের বোরো ধানকর্তন অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। রবিবার বিকালে নেত্রকোনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ বিলাস চন্দ্র পাল ধান কর্তন উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষন অফিসার(ডিটিও) কৃষিবিদ মোঃ মতিউজ্জামান, অতিরিক্ত উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মোস্তফা কামাল প্রমুখ। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রি-২৯ ও হাইব্রিড ধান কাটা শুরু হবে। বিগত ২টি মৌসুমে উপজেলার সবক’টি হাওর থেকে এক মুঠো ধান গোলায় তুলতে না পারলেও চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা যাচ্ছে।
তেথুলিয়া ইউনিয়নের তেথুলিয়া গ্রামের কৃষক মজিবুর রহমানের ধান ক্ষেতে ২০ স্কয়ার ফুট স্থান নিদৃষ্ট করে ধান কেটে পরিমাপ করা হয়। এতে ফলন হয়েছে একরে ৫৫মন। কৃষকরা ভিজা ধান বিক্রি করেছেন ৬’শ ৫০টাকা মন দরে। গত মৌসুমের এই সময়ে প্রবল বর্ষনে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে বাঁধ উপচে হাওরে পানি প্রবেশ করে। চোখের সামনে হাজার হাজার হেক্টর বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে যায়। এ বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক উপজেলার সবক’টি হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী মাহমুদ আকন্দ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আক্তারুজ্জামানসহ অন্যন্য কর্মকর্তা, কমিটির নেতৃবৃন্দসহ জনপ্রতিনিধিরা গুরুত্বের সঙ্গে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের তদারকি করেছেন। নেত্রকোণা -৪ আসনের এপি রেবেকা মমিন, নবাগত জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম বাধঁ পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন। চলতি বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড জেলার প্রতিটি উপজেলায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ করেছে।
মোহগঞ্জের হাওরজুড়ে এখন সোনালী ও সবুজের সমারোহ। এ মৌসুমের ফসল ঘরে উঠলেই কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে ও কৃষকদের দুঃখ অনেকটা লাঘব হবে। বার-বার ফসল হারিয়ে কৃষকরা হয়ে ছিলেন নিঃস্ব।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মোহনগঞ্জে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার ৮শ ২০ হেক্টর। চাষ হয়েছে ১৭ হাজার ১’শ হেক্টর। এর মধ্যে উপশী জাতীয় ধান চাষ করা হয়েছে ১৬ হাজার ৭’শ ৩৩ হেক্টর জমিতে। হাইব্রিড চাষ করা হয়েছে ৩’শ ৫৫ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ১২ হেক্টর। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মফিজুল ইসলাম নাফিজ জানান, চলতি মৌসুমে বোরোর ফলন ভাল হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে । উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ দুলা মিঞা জানান, হাইব্রিড, উপশী জাতীয় উচ্চ ফলনশীল ধান কাটা শুরু হতে আরো ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ফলন হবে ৩ হাজার ৩’শ মেঃ টন ধান। খাদ্য উদৃত্ত এই উপজেলার মানুষের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে বাকী ধান, চাল দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়।