সুনামগঞ্জে খাদ্যবান্ধব কর্মসুচী চাল কালো বাজারে বিক্রির অভিযোগ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সরকারি বরাদ্দের ১০ টাকা কেজির খাদ্য বান্ধব কর্মসুচীর চাল কালো বাজারীদের নিকট বিক্রয় করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ডিলারের বিরুদ্ধে।’ উপজেলার বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর কার্ড সুবিধাভোগীদের নিকট উক্তোলনকৃত চাল ১৩৫ কার্ডধারীর মধ্যে চাল বিতরণ না করে কালো বাজারে চাল বিক্রয় করে দিয়েছেন বলে চাল প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত কার্ডধারীরাই অভিযোগ তুলেছেন ওই ডিলারের বিরুদ্ধে।’ এমন কৌশলী ’ডিলার হলেন ওয়ার্ড আওয়ালীগের সাবেক সভাপতি।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সরকার এ কার্যক্রম চালু করলে সারা দেশের ন্যায় উপজেলার বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের এ সুবিধা ঈস্খদান করা হয়।’
উপজেলার বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের কার্ডধারীদের সুত্রে জানা যায়, সরকার দুঃস্থ ও গরীব মানুষের মধ্যে ১০টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির লক্ষ্যে উপজেলার বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে ১ হাজার ৬০ জন সুবিধাভোগীর নামের তালিকা অনুমোদন করেন। এর মধ্যে ৯২৫টি কার্ডধারীর মধ্যে ডিলার চাল বিতরণ করেন। অবশিষ্ট ১৩৫টি কার্ড গোপনে ডিলার নিজের হেফাজতে রেখে প্রতিবারই সরকারি ডিওর চাল উক্তোলন করে ওই ১৩৫ কার্ডধারীর চাল কালোবাজারীদের নিকট চড়া দামে বিক্রি করে আসছেন।
উপজেলার বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের ১হাজার ৬০ জন কার্ডধারীর তালিকা থেকে বরাবরই ১০টাকার কেজির চাল প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন এমন ব্যাক্তিরা হলেন উপজেলার বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের লাউড়েরগড় গ্রামের আব্দুল কাইয়ুম (৪৩৪৮), খোকন(৪৩৫০), জাহেরা(৪৩১৪), ফারুক মিয়া (৪৩৪৯), ফয়জুর রহমান (৪৩১৫), আব্দুল মুকিত (৪৩৩৬), ছত্তার উদ্দিন (৪৫৪৬), বিন্নাকুলি গ্রামের আব্দুল হান্নান (৪২৮০), মিনহাজ উদ্দিন (৪৪৩৯), আকলিমা (৪২১১), কুকিলা (৪১৭৭), আমজদ আলী (৪৪৪৯), সাধনা বেগম (৪৪৩৭), আরফিন (৪৪৬৮), শফিকুল (৪৪৬০), জালাল মিয়া ((৪৪৪৬), নুরপুর গ্রামের হিরা মিয়া (৩৯৪২), কুনাট গ্রামের ফজলুল হক (৩৯৪৮), জুলেকা (৩৯৪৭), পাঠানপাড়া গ্রামের জহুর((৪৭২৭), শফিক (৪৩৬১), নোয়াগাও গ্রামের আবু বক্কর (৩৭০৬), হেলেনা (৩৭০৫), নাগরপুর গ্রামের রইছ উদ্দিন (৩৭৭২), শাহাব উদ্দিন (৩৭৭৫), কামড়াবন্দ গ্রামের মিন্টু (৪৭২৮), শফিকুল (৩৯৫১), জৈতাপুর গ্রামের রশিদ (৪৬৯৬), ঘাগড়া গ্রামের জয়নাল আবেদীন (৪৭১৭), রুশনারা খাতুন (৪৫৬৫), সবুজ মিয়া (৪৭০৮), আলী হোসেন (৪৫০৩) সহ এমন আরো অনেকেই।
১৩৫ জনের কার্ড বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ডিলার মহিবুর রহমান চৌধুরীর নিকট রক্ষিত রয়েছে বলেও জানান অভিযোগকারীগণ।
উপজেলার বাদাঘাট বাজারের ব্যবসায়ী আলীম উদ্দিন আরো জানান, বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ডিলার জয়নাল আবেদীন ৩০ কেজি চালের বিপরীতে ৩শ’ টাকার স্থলে সুবিধাভোগীদের নিকট থেকে ৩শ ৫০ টাকা নিয়েছেন।’ তিনি আরো জানান, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে এ পর্যন্ত ১৩৫টি কার্ডের চাল ’ ডিলার মুহিত চৌধুরী সরকারি দলের দাপট দেখিয়ে উত্তোলন করে চড়া দামে কালো বাজারে বিক্রয় করে দিয়ে নিজের আখের গুছিয়েছেন।
উপজেলার বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের লাউড়েরগড় গ্রামের আব্দুল কাইয়ুম কার্ড নং (৪৩৪৮), খোকন(৪৩৫০), জাহেরা(৪৩১৪), বিন্নাকুলি গ্রামের আব্দুল হান্নান (৪২৮০), কামড়াবন্দ গ্রামের মিন্টু (৪৭২৮) সহ অনেকেই জানান , ডিলাররা আমাদের কোন কার্ড দেননি এমনকি আমরা জানিও না আমাদের নামে কার্ড তৈরী করে তারা এমন পুকুরচুরিতে নেমেছেন।
চালের দাম প্রতি ৩০ কেজিতে কার্ডধারীদের নিকট থেকে ৫০ টাকা বেশি নেয়ার বিষয়টি ডিলার জয়নাল আবেদীন অস্বীকার করেন। তিনি আরো বলেন, আমার হেফাজতে কোন কার্ড রক্ষিত নেই।
উপজেলার বাদাঘাট উওর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ৪ নং ওয়ার্ড শাখার সাবেক সভাপতি ডিলার মহিবুর রহমান চৌধুরী মুহিত বলেন, আমি যথা নিয়মে চাল বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। ১৩৫ কার্ড নিজের হেফাজতে রেখে ওই চাল কালো বাজারে বিক্রয়ের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিরি বার বার প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।
তাহিরপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আনোয়ারুল হক বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড বিতরণের সময় আমি এখানে ছিলাম না, কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তা দ্রুত তদন্ত করে ডিলারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।