খালিয়াজুরীতে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেফতার-৩

খালিয়াজুরী প্রতিনিধি : নেত্রকোনার খালিয়াজুরিতে সোনালী ব্যাংকের এক জুনিয়র ক্যাশ কর্মকর্তা ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের দুই কর্মীর যোগসাজেশে বিভিন্ন ভাতার মোট ১৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা আত্মসাতের পর তা উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরকার আবদুল্লা আল মামুন বাবুর হস্তক্ষেপে আত্মসাত করা টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন। পরে ওই তিন কর্মকর্তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
তারা হলেন, সোনালী ব্যাংকের খালিয়াজুরী শাখার জুনিয়র ক্যাশ কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদ, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কারিগরী প্রশিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও ইউনিয়ন মাঠকর্মী মামুন উদ্দিন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খালিয়জুরিতে ছয়টি ইউনিয়নে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধি মোট ৪,৭৩৮ জন ভাতাপ্রাপ্ত রয়েছেন। তাদের মধ্যে বয়স্ক ২৬৯৩, বিধবা ১৫২৬ ও প্রতিবন্ধি ৫১৯ জন। গত সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন ইউনিয়নের ওই সুবিধাভোগীদের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের খালিয়াজুরি শাখায় তার নিজস্ব ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা দেওয়া শুরু হয়। সেখানে জুনিয়র ক্যাশ কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদ, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কারিগরী প্রশিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও ইউনিয়ন মাঠকর্মী মামুন উদ্দিনের যোগসাজেশে ভাতাভোগীদের টিপসই নিয়ে প্রতিজনকে ১৫-১৮শ’ করে টাকা কম দেন।
বয়স্ক ও বিধবাদের ১২ হাজার ৩০০ টাকার মধ্যে ১০ হাজার ৫০০ টাকা এবং প্রতিবন্ধিদের ১৫ হাজার টাকার মধ্যে ১৩ হাজার ২০০ করে প্রদান করেন।
গত বুধবার পর্যন্ত উপজেলার সদর ও গাজীপুর ইউনিয়নে ৯৩৮ জনের মধ্যে টাকা বিতরণ করা হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয়রা খালিয়জুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছানোয়ারুজ্জামান জুসেফকে জানানোর পর তিনি ভুক্তভোগীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার ইউএনও’র স্মরণাপন্ন হন।
পরে সঙ্গে সঙ্গে লোক পাঠিয়ে ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তাদের ইউএনও’র কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়। এ সময় ভুক্তভোগীরা অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিদের দেখে বিক্ষোভ করেন।
অভিযুক্তরা প্রথমে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে সত্যতা স্বীকার করেন। এ সময় তাদেরকে ইউএনও’র কার্যালয়ের একটি কক্ষে আবদ্ধ রাখা হয়। পরে ইউএনও’র নির্দেশে আত্মসাতের মোট ১৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ওই তিন ব্যক্তি আলাদা নিজস্ব চেক দিয়ে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে ভোক্তভোগীদের মধ্যে ফেরত দেন। পরে আজ বৃহষ্পতিবার সন্ধায় তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয় প্রশাসন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অভিযোগের কথা আমি শুনেছি। বর্তমানে আটাপাড়া উপজেলায় আমি কর্মরত। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার আবদুল্লা আল মামুন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘সমাজসেবা কার্যালয় ও সোনালী ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজেশে এই টাকা আত্মসাত করা হয়েছিল। তা উদ্ধার করে ভুক্তভোগীদের মধ্যে ফেরত দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বলা হয়েছে।
এ নিয়ে সোনালী ব্যাংক খালিয়াজুরী শাখার ব্যবস্থাপক সুস্থির সরকার জানান, অভিযোগ প্রমানিত হলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এবিষয়ে জানতে চালে নেত্রকোনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মাদ আরিফুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি শুনার পর আমরা কৌশলে সরকারী টাকা উদ্ধার করি। টাকা উদ্ধারের পর তাদেরকে পুলিশে দেয়া হয়েছে। এব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।