ঝোঁপের ভেতর পাওয়া নবজাতকের নাম রাখা হল ‘স্বাধীন আহমেদ’

কেন্দুয়া প্রতিনিধি: সুস্থ আছে ‘স্বাধীন আহমেদ’। না থাক মা-বাবা ! পৃথিবীর আলো দেখতে না দেখতেই অবহেলার মধ্যে পরেছে সে। একটি ঝোপের মধ্যে ফেলে পালিয়ে যায় হতভাগা মা বাবা। ঝোঁপের ভেতর শিশুর কান্না শুনতে পেয়ে পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিশুটির অবস্থা দেখে প্রাথমিক চিকিৎসার পর নাম রাখেন ‘স্বাধীন আহমেদ’।
স্বাধীনতার মাস মার্চের প্রথমদিন বৃহস্পতিবার ভোরে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার বানিয়াগাতী গ্রামের রাস্তার পাশের ঝোঁপের ভেতর পাওয়া সেই নবজাতক (ছেলে) শিশুটির নাম রাখা হয়েছে ‘স্বাধীন আহমেদ’। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুকতাদিরুল আহমেদ এ নাম রাখেন। শিশুটির খোঁজ নিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যান। সেখানে তিনি শিশুটির সার্বিক খোঁজ-খবর নেন এবং প্রাথমিক চিকিৎসার সকল দায়-দায়িত্ব নেন। এ সময় কেন্দুয়া থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম ও বিভিন্ন গণমাধম্যের কর্মীসহ স্থানীয় গণ্যামান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ থাকলেও তার সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে উপজেলা সমাজসেবা অফিসের তত্ত্বাবধানে শিশুটিকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোরে বানিয়াগাতী গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের স্ত্রী মিনা আক্তার ফজরের নামাজ আদায় করার জন্য অজু করতে বাড়ির পাশের টিউবওয়েলে গেলে শিশুটির কান্না শুনতে পান। পরে প্রতিবেশীদের ডেকে নিয়ে মিনা আক্তার রাস্তার পাশে ঝোঁপের কাছে গেছে শিশুটিকে ঝোঁপের ভেতর পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় মিনা আক্তার শিশুটিকে ঝোঁপের ভেতর থেকে উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেন এবং পুলিশের পরামর্শে ওই শিশুটির নাড়ি কাটেন। এদিকে কেন্দুয়া পুলিশের এসআই আবুল হাসেম ও এসআই মোশারফ হোসেন শিশুটিকে সকাল ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুজ্জামান জানান, শিশুটিকে জন্মের এগারো ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে শিশুটি আশংকা মুক্ত। তবুও শিশুটির সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কেন্দুয়া থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, শিশুটি বর্তমানে উপজেলা সমাজসেবা অফিসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুকতাদিরুল আহমেদ জানান, স্বাধীনতার মাসে পাওয়া অজ্ঞাতপরিচয় নবজাতকের নাম রেখেছি ‘স্বাধীন আহমেদ’। শিশুটিকে বর্তমানে উপজেলা সমাজসেবা অফিসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে তার পরিচয় পাওয়া গেলে তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। নতুবা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সমাজ সেবা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমরা গুরুত্ব দিয়ে স্বাধীন আহমেদ এর চিকিৎসা ব্যবস্থা করছি। আমি এখনো নেত্রকোনা হাসপাতালে আছি।
নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের আসাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা একরামুল হোসেন জানান, শিশু স্বাধীন আহমেদ সুস্থ আছে।তার চিকিৎসায় সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হবে।
জেলা সিভিল সার্জন তাজুল ইসলাম জানান, এখনো ( রাত পৌনে নয় টা)হাসপাতালে পৌছেনি। হাসপাতালে ভর্তি হলে গুরুত্ব দিয়ে তাকে দেখা হবে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।