ধর্মপাশায় হাওর রক্ষা বাঁধে অনিয়মের অভিযোগ

মিঠু মিয়া, ধর্মপাশা প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা  উপজেলায় হাওররক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হতে আর মাত্র ৫ দিন বাকী থাকলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে  বাঁধের কাজ  সম্পন্ন হওয়ার কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছ না। কোন কোন বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও অধিকাংশ বাঁধের কাজ ৪০% থেকে ৫০% কাজ বাকী রয়েছে।তাছাড়া কোন বাঁধেই নিয়ম মেনে কাজ করা হচ্ছেনা। এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে বাঁধের গোড়া থেকে মাটি তুলে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। বাঁধ নির্মাণ কাজে নীতিমালা অনুসরণ না করে কাজ হচ্ছে
নীতিমালা বহির্ভূতভাবে।

সরেজমিন  হাওর এলাকা ঘুরে দেখা যায়,  সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিন ইউনিয়নের চন্দ্রসোনারথাল হাওরের অংশ ফসলরক্ষা বাঁধের প্রকল্প নং -১৪  পিআইসির সভাপতি  হক্কু মিয়া প্রকল্প নং-  ১৩ পিআইসি সভাপতি বদরুল হুদা চৌধুরী  , প্রকল্প নং-  ০৪ পিআইসি সভাপতি  শাহজামাল, প্রকল্প নং-০৫ শামীমা আক্তার,  প্রকল্প নং-১২পিআইসির সভাপতি আলমগীর কবির,  প্রকল্প নং-  ০২ পিআইসির সভাপতি শাহআলম,এ হাওরের অংশ জয়শ্রী ইউনিয়নের প্রকল্প নং-  ৮২ পিআইসির সভাপতি আবুল হাসেম,  প্রকল্প নং- ৯২ পিআইসির সভাপতি দিলীপ কুমার তালুকদার, প্রকল্প নং-২০ পিআইসির সভাপতি দীপক রঞ্জন তালুকদার,প্রকল্প নং-১৯ পিআইসি সভাপতি মিহির রঞ্জন তালুকদার, প্রকল্প নং-০১ পিআইসি সভাপতি আব্দুল মোতালিব , উল্লেখিত পিআইসি সভাপতিরা বাঁধ নির্মাণ কাজে দায়িত্বে থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজাইন বহির্ভূত বাঁধ নির্মাণ করছেন।  নীতিমালা অনুযায়ী দুর্মোজ দ্বারা মাটি কম্পেক্ট না করেই  নিজের ইচ্ছেমত কাজ করাচ্ছেন। বাঁধের কাছ থেকে মাটি উত্তোল করছেন।চন্দ্রসোনারথাল হাওরের প্রকল্প নং-১৪ পিআইসি সভাপতি হক্কু মিয়া  বাঁধের গোড়া থেকে মাটি উত্তোলন করে বাঁধের কাজ করতে থাকে।
পরে সংশ্লিষ্ট দ্বায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে পাশের গর্ত মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়। কিন্ত নতুন মাটি দিয়ে গর্ত ভরাট করার ফলে এবং দূর্মোজ ব্যাবহার না করার ফলে বাঁধের উপরে ফাটল দেখা দিয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই মাটি ধসে গিয়ে  ভেংগে যেতে পারে এ গুরুত্বপূর্ণ বাঁধটি। এ হাওরের প্রকল্প নং-০৪ পিআইসি সভাপতি শাহজামাল বাঁধে মাটি ফেলে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতায় কাজ করছেন। বাঁধ নির্মানে  মোটে ও দূর্মোজ ব্যাবহার করছেন না। এ ব্যাপারে শাহজামাল বলেন বাঁধের কাজে দূর্মোজ ব্যাবহারের পরিবর্তে এস্কেভেটর মেশিনের সাহায্যে মাটি বসানো
হচ্ছে। দেখা যায় এস্কেভেটর মেশিন শুধুমাত্র মাটি ভরাটের কাজ করছে।
জয়শ্রী ও চামরদানি  ইউনিয়নের কাইল্যানী হাওরের অংশ প্রকল্প নং- ৬৮ সভাপতি আবুল কালাম বাঁধের গোড়া থেকে মাটি উত্তোলন করছেন।  প্রকল্প নং-৬৭ পিআইসি সভাপতি আলমামুন,প্রকল্প নং-৬৬ পিআইসি সভাপতি জাহেদুর রহমান ও প্রকল্প নং-৭৪ পিআইসি সভাপতি বকুল চন্দ্র তালুকদার দায়সারাভাবে বাঁধের কাজ করছেন। প্রকল্প নং-৭৫ পিআইসি সভাপতি সেলিম তালুকদার, প্রকল্প  নং-৭১ পিআইসি সভাপতি সোহেল মিয়া,প্রকল্প নং-১২৪ পিআইসি সভাপতি অধীর চন্দ্র তালুকদার বাঁধের কাছ থেকে মাটি উত্তোলন করে ঘাসের উপর বাঁধ নির্মানের কাজ করছেন,প্রকল্প নং- ৭৩ পিআইসি সভাপতি জ্যোতিষ ঠিকাদারের বাঁধের কাজের গতি  অন্যান্যদের তুলনায়  কম, প্রকল্প নং-১২৬ পিআইসি সভাপতি চঞ্চল সরকার এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে বাধেঁর গোড়া থেকে মাটি তুলে বাঁধ নির্মাণ করছেন। কাইল্যানী হাওরের প্রকল্প নং-১২৪ পিআইসি সভাপতি অধীর চন্দ্র তালুকদার বলেন বাঁধের ৮০% কাজ হয়েছে। ৬ ফুট উচ্চতা করার পর বাঁধের উপরে দূর্মোজ ব্যাবহার করা হচ্ছে। এর কম উচ্চতা থেকে পর্যায়ক্রমে দূর্মোজ ব্যাবহার করলে আরও ভাল হতো বলে জানান তিনি। সর্বোপরি বাঁধ নির্মাণ কাজে নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেনা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতিরা।
বাঁধের মাটি কম্পেক্ট করা হচ্ছে না।ফলে বাঁধ আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছ। বাঁধের কাজে অনিয়ম ও ধীরগতির কারনে শঙ্খিত স্থানীয় কৃষকেরা। এজন্য পাউবো’র স্থানীয় কর্মকর্তাদের দায়ী করছেন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পাউবো উপজেলা কমিটির সভাপতি মামুন খন্দকার  বলেন বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। পাউবো উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব ও উপসহকারী প্রকৌশলী মাহমুদুল ইসলামের মোবাইল ফোনেএকাধিকবার চেষ্টা করে ও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য এ বছর হাওররক্ষা বাঁধের জন্য উপজেলায় ১শ’ ৩৪টি প্রকল্পের অনুকূলে প্রায় ২৫ কোটি ৫৭লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া
হয়েছে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।