নেত্রকোনায় দেয়াল পত্রিকা উৎসবে ছয় গুণীজনকে সম্মাননা

বিশেষ প্রতিনিধি: নেত্রকোনায় তৃতীয় ফাগুনের কবিতা ও দেয়াল পত্রিকা উৎসব হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া উৎসবে ছয় গুণীকে সম্মানান দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও বসন্ত উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারো নেত্রকোনা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা এ উৎসবের আয়োজন করেন।
এতে পৃষ্টপোষকতা করেন কলেজের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কবি সরোজ মোস্তফা। মঙ্গলবার সোমবার সকাল ১০টার দিকে কলেজের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অধ্যক্ষ মো. আবুল কামলাম আজাদ প্রধান অতিথি হয়ে উৎসব উদ্বোধন করেন।
দ্রাবিড়, করচ, পলিমাটি, পিদিম, বৈজয়ন্তি, চিত্রকল্পনা, মাধুর্য, ভাটফুল, সহজিয়া, কবিয়াল, হিজল, অহংকার ২১, বর্ণমালা, বর্ণদূত, প্রত্যয়, প্রকৃতি, ঝিঝিপোকা, গুপ্তশ্রোতসহ বিভিন্ন নামে প্রদর্শিত ৯২টি দেয়াল পত্রিকায় একাদশ শ্রেণি থেকে স্নাতকোত্তর শ্রেণি পর্যন্ত অন্তত পাঁচ শতাধিক লেখকের লেখা স্থান পায়। সকাল ১০টায় উৎসবের উদ্বোধন হলেও সকাল পৌনে নয়টা থেকেই ওই স্থানে হাজারো শিক্ষার্থীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। কারো হাতে ডায়েরি, কারে হাতে খাতা, কারো বা হাতে বই নিয়ে একের পর একজন করে চলেন আবৃত্তি।
কবি সরোজ মোস্তফার পরিচালনায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্য্ বিভাগের প্রধান আফজাল রহমানের সভাপতিত্বে তরুণ প্রজন্মের কাছে সাহিত্য চর্চায় দেয়াল পত্রিকার গুরুত্ব ও সামগ্রিকতা নিয়ে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছাড়াও আলোচনা করেন, উপাধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম, কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক জিয়াউল কবীর, রাষ্ট্র বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু সাঈদ প্রমুখ। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, ৬৯ বছরের পুরাতন এই সরকারি কলেজের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় দেয়াল পত্রিকার উৎসব হয়েছে। বেলা ১২টার দিকে উৎসবের দ্বিতীয় পর্বে ছয় গুণীকে সম্মানা প্রদান করা হয়। তাঁরা হলেন, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মতীন্দ্র সরকার, সাংবাদিক ও ছড়াকার শ্যামলেন্দু পাল, কবি ইয়াসিনুর রহমান, উন্নয়নব্রতী বেগম রোকেয়া, সংগঠক ও কবি কামরুজ্জামান চৌধুরী এবং বাচিকশিল্পী সাইফুল্লাহ এমরান। অধ্যক্ষ মো. আবুল কামলাম আজাদ সংবর্ধিতজনদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।
সরোজ মোস্তফা জানান, তরুণ প্রজন্মের কাছে সাহিত্য চর্চায় দেয়াল পত্রিকার গুরুত্ব ও সামগ্রিকতা তুলে ধরার পাশাপাশি দেশপ্রেম, মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন, বিজ্ঞানমনস্ক, সৎ, দক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
জিয়াউল কবীর বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের দেশপ্রেম, মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন, বিজ্ঞানমনস্ক, সৎ, দক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে দেয়ালপত্রিকা অনুশীলনকে একটি নিয়মিত চর্চায় নিয়ে আসতে হবে।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাহিত্য আমাদের মনকে বড় করে তোলে। ভালো মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। যিনি সাহিত্য ভালোবাসেন, কবিতা ভালোবাসেন তিনি কখনো জঙ্গিবাদ হতে পারেন না। সাম্প্রদায়িক চিন্তা করে মানুষ মারতে পারেননা। কিংবা মানুষের অকল্যাণজনক কোন কাজ করতে পারেন না।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।