হাওরের ফসল রক্ষায় স্থায়ী সমাধান চায় হাওরবাসী

এস,এম, সারোয়ার খোকন: প্রতি বছর বোরো মৌসুমে হাওরের কৃষকদের উৎপাদিত ফসল একমাত্র বোরো ধান পাকার সময় অকাল বন্যায় চোখের জলে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে বাঁধে মাটির পরিবর্তে বালি দিয়ে বাঁধ নির্মান করে ফসল রক্ষা বাঁধ।
প্রতিবছর পানি আসার আগে নাম মাত্র টাকা খরচ করে সামান্য মাটি কেটে লোক দেখানো বাঁধ দিলেও শেষ পর্যন্ত সেই বাঁধগুলো টেকেনি।
বাঁধ গুলো প্রতি বছর সেই একই অংশ ভেঙে পানি ডুকে কৃষকের কষ্টার্জিত কোটি কোটি টাকার সোনার ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়। আরও কত নির্দয় অবহেলা? আর কত এই জনপদের ভাগ্যহত মানুষের সাথে নিষ্ঠুর প্রতারণা? এ প্রশ্ন ভুক্তভোগি কৃষকদের।
সরেজমিনে সংবাদ সংগ্রহ করার সময় সাংবাদিকদের সাথে কৃষকরা কথা বলতে গিয়ে আক্ষেপের সাথে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। কৃষকরা জানায় তারা আর মাটির বাঁধ চায় না, পিআইসি যেই হউক সে আসে মোটা অংকের টাকা লুটে ভাগ্য পরিবর্তন করতে। কৃষকের স্বার্থে কেউ হাওরে নিজের খেয়ে সময় নষ্ট করে না। তারা লুটপাট দেখতে চায় না। তারা চায় স্থায়ী বাঁধ।
প্রতি বছর সরকার কৃষকের ফসল রক্ষায় কোটি কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়। পিআইসি কমিটি ও ঠিকাদাররা ২৮ ফ্রেরুয়ারী তারিখের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও কোন কোন পিআইসি ঠিকাদার ঐ তারিখের মধ্যে কাজ শরুই করে না। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অন্যান্য বারের তুলনায় গেল বছর একমাস আগে অর্থাৎ উজান থেকে পাহাড়ী ঢলের পানি আর টানা বৃষ্টির পানিতে আধা পাকা ধান প্রথম দফায় তলিয়ে যায়। পানি কিছুটা নামার পর পানির মাঝেই ফেলা বালি/কোন কোন স্থানে মাটি ফেলা হলেও তা যতেষ্ট নয়। ২য় দফা পাহাড়ী ঢল ঠেকাতে কৃষকরা নিজেরাই বাধঁ উচু করার কাজে লেগে যায়।
প্রতিবার কৃষকরা ঘুরে দাড়াঁনো চেষ্টা শোষকদের হাতে জিম্মি কৃষকরা নিমিষের মাঝে তাদের চাতুরির কাছে সকল আশা বিলীন হয়ে যায়। বদলে যায় হাওরের অর্থনৈতিক চালচিত্র।
হাওরবাসীর দাবী ফসল রক্ষায় চান স্থায়ী সমাধান। কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার ইট কংক্রিট,ব্লক দিয়ে বন্যা প্রতিরোধ সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাওরের সমস্যা সমাধান করতে হলে বাঁধের উচ্চতা বাড়াতে হবে। বেশী ব্যয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মান করতে হবে। তবে গত ২ দশক ধরে মাটির বাঁেধর জন্য মাটি কাটতে কাটতে এখন প্রকল্প এলাকায় মাটি নেই। এ বছরে দূর থেকে মাটি এনে মাটির রেইট বেশী ধরে দিলেও পিআইসি কতিপয় কমিটি নিরুপায় হয়ে নিয়ম অমান্য করে সাইট এলাকা থেকেই মেশিন দিয়ে মাটি কাটছে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে পলি পড়ে শতশত বিল, নদী নালা ভরাট হয়ে গেছে। অবশ্য ইতি মধ্যে নদী খননের কাজ শরু হয়েছে। এবারেও কাবিটা প্রকল্পে কোটি কোটি টাকায় মাটি কেটে বাঁধ মেরামত করার জন্য বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। পিআইসি সিডিউল মোতাবেক কাজ করবেনা কিন্তু বাধঁ ভাঙলে, ফসল হানি হলে দায়ী হবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের। কারণ তারা কারিগরি বিষয়ে পারদর্শী। সরকার ফসল রক্ষায় এবার বিপুল পরিমান টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কাজ ভাল হচ্ছে। তবু প্রশাসনের ঘোষণা জনগনকে ভালভাবে কাজ বুঝে নিতে হবে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।