আটপাড়ায় কৃষক হত্যার দায়ে ১ জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ ২ জনের যাবজ্জীবন

বিশেষ প্রতিনিধি: নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার স্বরমুশিয়া ইউনিয়নের রূপচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফকে (৪৫) হত্যার দায়ে এক জনকে মৃত্যুদন্ড সহ ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, মামলার অন্য ২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অপর তিন জনকে ১ বছরের কারাদন্ড সহ ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং অপর তিন আসামীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন নেত্রকোনার জেলা ও দায়রা জজ কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা আদালত। সোমবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে আসামীদের উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী হলেন, রূপচন্দ্রপুর গ্রামের সুলতু খাঁ’র পুত্র নূরুল আমীন খাঁ (২৬), যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামীরা হলেন, সুলতু খাঁ’র পুত্র আল আমীন খাঁ (২৯) ও আব্দুল হামিদ খাঁ’র পুত্র তৌফিক খাঁ (২৭), ১ বছরের সাজা প্রাপ্ত আসামীরা হলেন, মৃত আরফান আলী খাঁ’র পুত্র সুলতু খাঁ (৫৬), আব্দুল হামিদ খাঁ’র পুত্র কাজল খাঁ (২৪), মৃত মোবারক আলী’র পুত্র তাজুল ইসলাম(৪৮), বেকসুর খালাস প্রাপ্ত আসামীরা হলেন, আনিছুর রহমান চৌধুরী’র পুত্র অলী চৌধুরী (৩০), মৃত ইজ্জত আলী’র পুত্র নূর আহম্মদ ওরফে নূর মোহাম্মদ (৩৮) ও আনিছুর রহমান চৌধুরী’র পুত্র সবুজ চৌধুরী (৩৮)।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে প্রকাশ, রূপচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফের সাথে সেলু মেশিনের সেচ দেয়াকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের নুরুল আমীন খাঁ গংদের বিরোধ চলে আসছিল। বিগত ২০১৩ সালের ১৬ জুন সন্ধ্যা ৬ টার দিকে কৃষক আব্দুল লতিফ তার অসুস্থ বড় ছেলে শরীফকে নিয়ে পাশ্ববর্তী কোনাপাড়া বাজারে যাওয়ার পথে কোনাপাড়া চৌরাস্তা মোড়ে পৌঁছতেই উল্লেখিত আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার উপর হামলা চালিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। স্থানীয় লোকজন তাকে আশংকা জনক অবস্থায় উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শেফালী বেগম বাদী হয়ে নূরুল আমীন খাঁসহ ৯ জনকে আসামী করে ১৯ জুন আটপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নূর আহমদসহ তিন আসামীকে বাদ দিয়ে আদালতে চাজশীর্ট দাখিল করে। বাদী পক্ষ না রাজি দিলে আদালত সিআইডিকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সিআইডি তদন্ত পূর্বক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নূর আহম্মদকে বাদ দিয়ে ২০১৪ সালের ১৭ মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বাদী পক্ষ পূনরায় না রাজি দিলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারী সকল আসামীর বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় প্রতিবেদন দাখিলের পর বিজ্ঞ বিচারক তা আমলে নিয়ে ২০ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহনান্তে ৬ জন আসামীর বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানীত হওয়ায় উপরোক্ত রায় প্রদান করেন। রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন, ভারপ্রাপ্ত পিপি এডভোকেট সাইফুল আলম প্রদ্বীপ, আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট নজরুল ইসলাম খান।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।