নেত্রকোনায় শৈত্যপ্রবাহে অচল জনজীবন : শীতার্তদের পাশে দাঁড়ান

স্টাফ রিপোর্টার: কনকনে হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশার কারণে গারো পাহাড় আর হাওর বাওর নদীনালা খাল বিল পরিবেষ্টিত নেত্রকোনার স্বাভাবিক জীবন যাত্রা বিপর্যস্ত হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে নেত্রকোনায় মাঝারী ধরণের শৈত্যপ্রবাহ আর ঘন কুয়াশা পরিলক্ষিত হচ্ছে। হঠাৎ করেই শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে কুয়াশার চাদর ভেদ করে দিনের বেলায় ১১/১২টার আগে সূর্যের আলো দেখা মিলে না। কোয়াশার কারণে দিনের বেলায়ও গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। শৈত্যপ্রবাহের কারণে সাধারন লোকজন একবারে জবুথবু হয়ে পড়েছে। নেহায়েত প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘরের বাইরে বের হতে চাচ্ছেন না। সবচেয়ে বেশী বেকায়দায় পড়েছে ভাসমান, ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ। গাছের ঝড়ে পড়া শুকনো পাতা ও খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন তারা। তীব্র শীতের কারণে স্কুল, কলেজ মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। শহরে প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকজনের সমাগম কমে যাওয়ায় ব্যবসা, বানিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। সব চেয়ে বেশি ভোগান্তির কবলে পড়েছে শিশু ও বয়স্ক লোকজন। অনেকে জ্বর, সর্দি,কাশি, পেটের পীড়াসহ শীত জনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। তারা জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল গুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন। শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় কদর বেড়েছে গরম কাপড়ের। শীতার্ত মানুষ শীত নিবারনের জন্য গরম কাপড়ের দোকান গুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন। বিশেষ করে নিন্ম আয়ের মানুষজন পূরাতন কাপড়ের দোকান গুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। প্রচন্ড শীতের কারণে কাজে অংশ নিতে না পাড়ায় দিনমজুরদেরকে পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক সময় উপোস থাকতে হচ্ছে।
বামনমোহা গ্রামের কৃষক আব্দুল হেকিম বলেন, প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে খেতে হাল চাষ করতে পারছি না। শ্রমিকরাও নামা খেতের পানিতে ধান লাগাতে চায় না। জেলা শহরের পারলা এলাকার আম্বিয়া খাতুন (৬৫) বলেন, আমার জীবনে কখনও এমন তীব্র শীত অনুভব করিনি। আনন্দ বাজার এলাকার নির্মাণ শ্রমিক হযরত আলী বলেন, শীতের কারনে কাজে যেতে না পারায় পরিবারের লোকজনদের নিয়ে অর্ধাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে।
নেত্রকোনার পৌর মেয়র আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম খান জানান,আমরা শীর্তাত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ শুরু করেছে। নেত্রকোনা পৌরসভার পক্ষ থেকে গত তিন দিনে সাড়ে তিনশ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরো বিতরণ করা হবেও বলেও তিনি জানান।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক ড. মোঃ মুশফিকুর রহমান  জানান, এপযর্ন্ত সরকারের পক্ষ থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৫৫ হাজার শীতার্ত মানুষকে শীত কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বেসরকারী উদ্যোগে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় শীত কম্বল বিতরণ চলছে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।