গৌরীপুরে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় পাঁচ ভাই-বোনের পড়ালেখা বন্ধ

মোঃ আনোয়ার হোসেন শরীফ, গৌরীপুর প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় বখাটের ‘প্রেম প্রস্তাব’ প্রত্যাখ্যান করায় এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ করে মারধর ও আপত্তিকর ছবি তোলার ঘটনায় বখাটে দেলোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হলেও এখন পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। গত মঙ্গলবার নির্যাতিতা মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে গৌরীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ, মামলা দায়েরের পর দেলোয়ার গা ঢাকা দিয়েছে। তবে দেলোয়ারের ছোট ভাই তপুল এখন মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা শুরু করছে। পাশাপাশি মেয়েটির আপত্তিকর ছবি লোকজনের মাধ্যমে অনেকের মুঠোফোনে ছড়িয়ে দিয়েছে দেলোয়ার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অত্যাচারের শিকার ওই পরিবারটির বাড়ি উপজেলার সহনাটি ইউনিয়নে হতিয়র গ্রামে। ‘প্রেম প্রস্তাব’ প্রত্যাখ্যান করায় গত ২৬ নভেম্বর মেয়েটি কোচিং সেন্টার থেকে অটোরিকশায় চড়ে বাড়ি আসার পথে তাকে অপহরণ করে প্রতিবেশী তারা মিয়ার ছেলে দেলোয়ার। এরপর মেয়েটিকে একটি বাড়িতে আটকে রেখে মারধর ও মেয়েটির আপত্তিকর ছবি তোলে। বর্তমানে বখাটে দেলোয়ারের ও তার লোকজনের অত্যাচারের ভয়ে ওই মেয়েটির পরিবারের উচ্চ মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, প্রাথমিকে অধ্যয়রনত আরো তিন বোন ও এক ভাইয়ের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার মেয়েটি জানায়, ‘ প্রেম প্রস্তাব’ প্রত্যাখ্যান করায় দেলোয়ার আমাকে অপহরণ করে মারধর করে আপত্তিকর ছবি তোলে। এখন আমি যদি তাকে বিয়ে না করি তাহলে ছবিগুলো ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এ ঘটনায় আমি মানষিক ভাবে ভেঙে পড়েছি। এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারছিনা।
নির্যাতিতা মেয়েটির বাবা বলেন, আপত্তিকর ছবি গুলো গ্রামের অনেকের মোবাইলে ছড়িয়ে পড়ছে। আর দেলোয়ারের ছোট ভাই তপুল এখন নতুন করে আমার মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা শুরু করেছে। সাংবাদিকরা বাড়িতে আসলেই দেলোয়ারের পরিবার আমাদের গালি-গালাজ করে। দেলোয়ার স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের আতœীয় হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না। এখন ওদের নির্যাতন ও যন্ত্রনায় আমাকে হয় মরতে হবে নয়তো গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইল সহনাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, কেউ আমার আতœীয় হলেই যে অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে এমনটা ভাবা ঠিক নয়। আমি মেয়েটির পরিবারের সাথে কথা বলে তাদেরকে স্কুল-কলেজে যাওয়ার কথা বলেছি। এ ঘটনায় দেলোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মেয়েটির পরিবার চাইলে আমি তাদের সবধরণের সহযোগিতা করবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দেলোয়ারে মা আলেয়া বেগম বলেন, আমাদের পরিবারের কোনো সদস্য মেয়েটির পরিবারকে গালি-গালাজ করেনা। উল্টো মেয়ের পরিবার আমার ছেলেকে মারধর করে তার মোবাইল রেখে দিয়েছে। দেলোয়ার বলেন, স্থানীয় গণ্যমান্যরা সালিশে আমাকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে ঘটনাটা মীমাংসা করে ফেলেছে। আর মেয়ের ছবিগুলো আমি মোবাইল থেকে ডিলিট করে ফেলেছি।
গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার আহমদ বলেন, বখাটের দেলোয়ার সহ মামলার আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। অন্য কেউ মেযেদের উত্ত্যক্ত করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।