মদনে মুক্ত জলাশয়গুলো প্রভাবশালীদের দখলে

ফয়েজ আহম্মদ হৃদয়, মদন থেকে: নেত্রকোনার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মুক্ত জলাশয় মগড়া, শাখা নদী ধলাই, কাঠালচোরা নদীতে গাছের ডাল-বাশঁ পুতে মুখে বাশেঁর বানা-মাটির বাধঁ দিয়ে পানি শুকিয়ে মাছ নিধন ও নদীর তলায় ধান রোপন করে মুক্ত জলাশয় দখল করে রেখেছে কতিপয় এলাকার প্রভাবশালীরা। গত কয়েকবছর আগেও রামগোপালপুরের পিছনের ধলাই নদীর প¦ার্শবতী জমিগুলোতে পাওয়ার পাম্পে সেচসহ এ নদীতে মাছ ধরে শতাধিক দরিদ্র লোক জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে নদীর বুকে ধান রোপন করায় সবকিছু থেকে বঞ্চিত জেলে ও কৃষকগণ। মদন উপজেলার তিন ইউনিয়নসহ অন্য উপজেলার কৃষকগণের যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন এই নৌ-পথ। নৌ-পথের মোহনায় বাধ দিয়ে মাছ নিধন করায় রবি মৌসুমের শুরুতেই শত শত কৃষক গৃহস্থালির যোগাল-পাতি নিয়ে যাতায়াতের চরম দূর্ভোগ ও নানা সমস্যার সম্মূখীন হচ্ছেন। এ নদী পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে শত শত কৃষক হাওরে উৎপাদিত ধান ঘরে তুলতে নানান দূর্যোগের সম্মূখীন হবেন।
এ ব্যাপারে তলার হাওরের জিরাতি কৃষক সোনা মিয়া, লাইমন, রঞ্জন সুকুমার জানান, আমরা এ নৌ-পথে কৃষির যোগাল-পাতি নিয়ে এবং উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে যাতায়াত করে থাকি। মগড়া ও শাখা ধলাই নদীতে গাছের ডাল, বাশঁ পুতে কাটা দেয়ায় এ পথের যাতায়াত প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন আমরা এ স্থানে এসে কাটার মালিক ফতেপুর গ্রামের হাদিস খানের সাথে তর্কবিতর্কে জড়াতে হচ্ছে। আমরা জানতে পারলাম এই মুক্ত জলাশয়গুলো এলাকার প্রভাবশালীরা মসজিদ-মাদ্রাসার নামে লোকজনের কাছে পত্তন দিচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সহায়তার লক্ষে নদী পথের যাতায়াত সুগম করার জন্য দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আশুহস্থক্ষেপ নিবেন বলে তারা আশা করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার জৈনক জেলেরা জানান, আমরা আগে মগড়া ও ধলাই নদীতে জাল দিয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতাম। এখন মুক্ত জলাশয়গুলো ফতেপুর গ্রামের হাজ্বী মিশন চৌধুরী পত্তন দিয়ে দখলে নেওয়ায় আমরা মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হয়ে অন্য পেশায় আবার অনেকেই মানবেতর জীবন-যাপন করছে। আমরা মুক্ত জলাশয়গুলোতে অবাধে মাছ ধরার সুযোগ চাই।
ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম চৌধুরী উক্ত মুক্ত জলাশয়গুলো মসজিদ-মাদ্রাসার নামে ইজারা পত্তন হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এর অর্থ ৪/৫টি মসজিদ-মাদ্রাসার উন্নয়নে ব্যয় হচ্ছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, প্রবাহমান নদীতে বাধ দিয়ে মাছ ধরার কোনো সুযোগ নেই। এভাবে কেউ বাধ দিলে ইউএনও স্যারকে নিয়ে অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইউএনও মোঃ ওয়ালীউল হাসান জানান, মুক্ত জলাশয়ে বাধ দিয়ে মাছ নিধনে কারো সুযোগ নেই। এ ধরণের কোনো খবর পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।